এবারের পানডেমিক উদ্চেঃস্বরে একটি বার্তা আমাদেরকে দিয়ে যাচ্ছে, ত
হে এই ধরনের বিপর্যয়ের মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত নই এব: রেখে
রে ৰা নক খোলা প্রশ্ন। এটি এমন একটি বিপর্যয়, যা কেবলমাত
আমাদের শারীরিক সুস্থতাকেই চ্যালেঞ্জ করেনি, সারাবিশ্বের অর্থনীতি
রাজনীতি, শিক্ষানীতি, সমাজ ব্যবস্থা- এককথায় আমাদের সমগ্র অস্তিত্বের
মূলে আঘাত করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে একমাত্র বিজ্ঞান আমাদেরকে
বঁচে থাকার আশার আলো দেখাচ্ছে । কিন্তু সেখানেও সমস্যা । রাজনীতি
শক্ষাব্যবস্থা, ধনী দেশগুলোর স্বার্থপরতা, গবেষণায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগের
অভাব এবং এই ধরনের নানা প্রতিবন্ধকতা বিজ্ঞানকে নির্বিঘ্নে কাজ করতে
দিচ্ছে না। বিজ্ঞানের দরকার পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন; বাস্তব জীবনে ভালোভাবে
বঁচে থাকার জন্য বিজ্ঞানের হাতে ছেড়ে দিতে হবে পূর্ণ নেতৃত্ব; এই
ণ ধরনের বিপর্যয়ে রাজনীতিবিদরা যে কতটা অসহায় তা আমরা বর্তমান
বিশ্ববিপর্যয়ের বাস্তবতায় অনুধাবন করেছি। বিজ্ঞান কিন্তু রাষ্ট্রনায়কদের
| জন্য অপেক্ষা করেনি, বিপর্যয়ের শুরুতেই 'কোমর বেঁধে' সামনে দাঁড়িয়ে
যুদ্ধ করে গেছে এবং যুদ্ধে জিতে আমাদেরকে প্রতিকার উপহার দিয়েছে
এই প্যানডেমিক থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি, সাধারণ
মানুষের মধ্যে ভাইরাসের ওপর একটি প্রাথমিক ধারণা থাকলে এই
ধরনের বিপর্যয়কে অতিক্রম করা সহজতর হতো। মানুষের মধ্যে অকারণ
ভীতি, নানা ধরনের ভুল ধারণা, এবং প্রচারণার খণাত্মক প্রভাবকে এড়ানো
যেত। নানা ধরনের গুজব, প্রতিক্রিয়াশীল তত্ত্ব, ভুল এবং বিকৃত তথ্য
সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ডভাবে বিভ্রান্ত করে তোলে। ভ্যাকসিন নেয়ার
ব্যাপারে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও অনীহা মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ে
আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ৩০% মানুষ একটি ভ্যাকসিনও নেয়নি, অথচ
এটি প্রমাণিত সত্য ভ্যাকসিন ছাড়া মৃতের সংখ্যা হয়তো বর্তমানের
তুলনায় বহুগুণ হতো। এই পরিস্থিতির অন্যতম প্রধান কারণ হলো,
ভাইরাস সম্পর্কে আমাদের প্রাথমিক ধারণার অভাব। এটিই শেষ
প্যানডেমিক নয়, ১৯১৮ সালের বড় প্যানডেমিক-এর পর অনেকগুলি ছোট
ছোট প্যানডেমিক হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতেও একই পরিস্থিতির উদ্ভব
নব হবে, সম্ভবত অপেক্ষাকৃত স্বল্প বিরতিতে । তাই এখানে আমাদের প্রয়াসটি
হলো SARS-CoV-2 ভাইরাসটির পাশাপাশি ভাইরাস সম্পর্কে একঢা
পাথমিক পরিচয় তুলে ধরা, এব তিক্িয়াশীল তত্তবগুলির স্বরূপ উদঘাটন
ভাইরাস শুধুমাত্র কোনো নীবিত প্রাণীর কোযে অনুপ্রবেশ করে
বংশবিস্তার করতে পারে, অর্থাৎ দেহের কোষেঢোকার আগ পর্যন্ত ভাইরাস
আমাদের ক্ষতি করতে পারে না। ভাইরাস সত্যিই জীবিত অস্তিত্ব কিনা তা
নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। এই প্রসঙ্গে যদি আমরা
আাইক্রোবায়োলজির প্রেক্ষাপট ব্যবহার করি তবে তা পাঠকদের জন্য বেশ
দর্বোধা হয়ে উঠবে এবং কাজের রিসরটি হয়ে যাবে বিশাল । তাই
বইটিকে পাঠকদের কাছে সহজবোধ্য করে তোলার জন্য, সচেতনভাবে
আমরা এখানে মাইক্রোবায়োলজি প্রেক্ষাপটকে য তদর সম্ভব এড়িয়ে গেছি
অন্যদিকে বইটিকে বিজ্ঞান ও গবেষণাধর্মী করে তোলার জন্যও অমর
চষ্টা করেছি। দুটি ক্ষেত্রের মাঝখানে রাস্তা «তরি করা কঠিন কাজ- আমরা
যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, বিচারের দায়িত্ব পাঠকদের
"থম অধ্যায়টিতে আমরা ভাইরাসটির বিবর্তনের একটি সংক্ষিপ্ত
ইতিহাস, প্যানডেমিক-এর শুরুর দিকের বাস্তবতা এবং দুজন অসাধারণ
বিজ্ঞানীর অবদানের কথা সংক্ষেপে তুলে ধরেছি। তার মধ্যে একজন
চূড়ান্ত বিপদের সময় সবার সামনে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করেছেন, বর্তমানে অসুস্থ
অবহেলিত এই মহীয়সী বিজ্ঞানী পর্দার আড়ালে, অন্যের সাহায্য নিয়ে
চলাফেরা করছেন!
দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায়টিতে আমরা ভাইরাসটির একটি সংক্ষিপ্ত
সামগ্রিক পরিচয় তুলে ধরেছি। তাছাড়া আমাদের দেহ-প্রতিরক্ষাব্যবস্থা
কীভাবে প্যাথজেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তার একটি প্রাথমিক পরিচিতি
সেখানে তুলে ধরেছি। চতুর্থ অধ্যায়টিতে এই ভাইরাসটি যে একটি
দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করে গেছে তার একটি প্রতিচিত্র তুলে ধরা হয়েছে
অবশ্য এই সমস্যাটি একেবারেই সাম্প্রতিক এবং প্রচুর গবেষণা হচ্ছে
অনেক কিছুই এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি।
পঞ্চম অধ্যায়ে আমরা ভ্যাকসিন তৈরির আদি উদ্যোগ থেকে তৈরি
হওয়া পর্যন্ত প্রক্রিয়ার একটি প্রতিচিত্র তুলে ধরেছি। আমাদের ধারণা ড
কারিকো ক্যাটালিন এবং ড. ওয়াইসম্যান ২০২২ সালে নোবেল প্রাইজের
শক্তিশালীতম প্রার্থী।
আর শেষ অধ্যায়টিতে প্রতিক্রিয়াশীল তত্ত্ব, ভুল ও বিকৃত তথ্য
(Misinformation,Disinformation) সম্পর্কে বলা হয়েছে। আমাদের
ধারণা, সাধারণ মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়, কারণ
পাশ্চাত্য জগতে বিষয়টি পরিচিত হলেও প্রাচ্যে তত্ত্বটের প্রচণ্ড ক্ষতি করার
ক্ষমতার কথা এখনও পরিচিত হয়ে ওঠেনি। আগামী প্রজন্মের এবং
ভবিষ্যৎ পৃথিবীর বিশাল ক্ষতিকারক যে উৎসগুলি আছে, এটি তার মধ্যে
একটি
এবার কৃতজ্ঞতা জানানোর পালা- ড. জামান ভূমিকাটি লেখার
গুরুদায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। বস্তুত ড. জামানের সক্রিয় উদ্যোগ এবং
অক্লান্ত পরিশ্রম ছাড়া কখনওই এই কাজটি বইয়ে রূপ নিত না।
পারিবারিক এবং পেশাগত কর্মব্যস্ততার সমান্তরালে তিনি যেভাবে কাজটি
করেছেন তা অসামান্য ৷ দ্বিতীয়ত, কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি রাকীন জামানকে।
সে আমাদের প্রচ্ছদটি করে দিয়েছে এবং গ্রাফিক্সে সহায়তা করেছে
তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। নৃ প্রকাশন-এর স্বত্বাধিকারী জনাব ফয়জুস
সালেহীন আমাদের বইটি প্রকাশের গুরুদায়িত্ব নিয়ে আমাদেরকে
কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন। তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ড. মো. সারওয়ার জামান
রাগিব আহসান খান
জুন, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ
- Never share card details or OTPs, and always verify items in person before payment. Bikroy does not offer a delivery service. Stay vigilant!
- Never share card details or OTPs, and always verify items in person before payment. Bikroy does not offer a delivery service. Stay vigilant!