ঘি আসলে কি?
দুধের ফ্যাট ( ক্রিম) বা বাটারকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় দুধ থেকে আলাদা করে, তারপর সেই ফ্যাটকে জ্বাল দিয়ে ঘি তৈরি করা হয়।
ঘি এ ফ্যাটের পরিমাণ ৯৯.৮%। যার প্রায় ৬০% সম্পৃক্ত ফ্যাট আর বাকি অংশ অসম্পৃক্ত ফ্যাট ও অন্যান্য ফ্যাটি এসিড। দুধে থাকা ফ্যাট এ ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ ৪০০ এর অধিক!
ক্রিম জ্বাল দিয়ে এর সাথে থাকা সলিড অংশ এবং তলানিকে আলাদা করে ফেলায় দিয়ে, শুধু লিকুইড অংশকে আলাদা করার পর ঠান্ডা করলেই জমে ঘি হয়ে যায়!
ঘি এর স্বাদ, কালার, ঘ্রাণ এবং দানাদার না অদানাদার, এটা নির্ভর করে দুধের মানে ক্রিমের কোয়ালিটি, জ্বাল ও কিভাবে ঠান্ডা করা হয়, সেটার উপর!
ঘি বানানোর অনেক গুলো প্রসেস আছে! তবে সবগুলো প্রসেস এ প্রথমে কাচা দুধ থেকে ক্রিম / বাটার আলাদা করে,, তারপর বাটার কে জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয়।
সাধারণ প্রসেস হচ্ছে, কাঁচা দুধ থেকে ফ্যাট/ক্রিম /বাটার কে মেশিনের সাহায্যে আলাদা করা হয়, আরেকটা প্রসেস হচ্ছে দুধের সর, যা মূলত ফ্যাট সেটাকে জমানো হয়।
তারপর এই ক্রিম/বাটার/ফ্যাটকে জ্বাল দিয়ে, তারল অংশ থেকে সলিড অংশ কে আলাদা করে ফেলায় দেওয়া হয়। এই তরল অংশ ঠান্ডা হলেই জমে ঘি তৈরি হয়।
ক্রিম/ ফ্যাটকে জ্বালানোর পরে যে তরল অংশকে ঠান্ডা করলে জমে ঘি তৈরি হয়, সেই তরলকে গরম অবস্থায় কালচে রং এর দেখায়! বিশেষ করে কড়া জ্বালের ঘি, তরল অবস্থায়!
আরেক রকম ঘি আছে, যার প্রডাকশন প্রসেস একটু আলাদা যেটাকে বলে, আয়ুর্বেদিক ঘি! এটা আমাদের দেশে খুব অপ্রচলিত, তবে ইন্ডিয়ায় এই প্রক্রিয়ায় এখনো ভালো পরিমাণ ঘি তৈরি করা হয়।
প্রসেসটা অনেক টা এরকম প্রথমে কাঁচা দুধ জ্বালানো হয়! তার এই দুুধকে ঠান্ডা করা হয়। তারপর এটা সারারাত ঢেকে রাখা হয়। এরপর এতে সামান্য টক দই মিশানো হয়, যা পরদিন দই হয়ে যায়। তারপর এই দই থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় বাটার তৈরি করে, তারপর এই বাটারকে জ্বাল দিয়ে ঘি তৈরি করা হয়।
ফ্যাট আর তেল কিন্তু একই জিনিস, দুটো ই ফ্যাটি এসিড। সাধারণ তাপমাত্রায় যেটা সলিড থাকে সেটা ফ্যাট আর যেটা তরল অবস্থায় থাকে সেটা তেল।
তাই ঘি শীতের দিন পুরোপুরি জমে গেলেও, বর্তমান সময়ের মতো মাত্রাতিরিক্ত গরমে পুরোপুরি গলে লিকুইড হয়ে যেতে পারে।
